News Details

News/News Details
জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

December 13, 2022 1 year ago 937


...

"জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি"

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি প্রেরণাদায়ী অঙ্গীকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপ তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেন। এ রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বাংলাদেশ বিপ্লব সাধন করেছে। যে গতিতে বিশ্বে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে তা সত্যিই অভাবনীয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ডিজিটাল অগ্রগতি থেকে একটুও পিছিয়ে নেই। অদম্য গতিতে আমরা চলছি তথ্যপ্রযুক্তির এক মহাসড়ক ধরে। আমাদের সাফল্য গাঁথা রয়েছে এ খাতে। যা সত্যিই গৌরব ও আনন্দের। ডিজিটাল দেশ হিসেবে সারা বিশ্বের বুকে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

ডিজিটাল বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে স্বাধীন বাংলাদেশে বিজ্ঞান, কারিগরি ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের ভিত যার হাত ধরে রচিত হয়েছিল, তা তুলে ধরাও আজ প্রাসঙ্গিক। ডিজিটাল বিপ্লবের শুরু ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে। ইন্টারনেটের সঙ্গে ডিভাইসের যুক্ততা মানুষের দৈনন্দিন জীবন, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে বিশ্বে উন্নয়ন দারুণ গতি পায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর গুরুত্ব গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। কারণ, তিনি গড়তে চেয়েছিলেন সোনার বাংলা। তার এ স্বপ্নের বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সময় পান মাত্র সাড়ে তিন বছর। এ সময়ে প্রজ্ঞাবান ও বিচক্ষণ রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ এমন কোনো খাত নেই, যেখানে পরিকল্পিত উদ্যোগ ও কার্যক্রমের বাস্তবায়ন করেননি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ১৫টি সংস্থার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্যপদ লাভ করে। আর্থসামাজিক জরিপ, আবহাওয়ার তথ্য আদান-প্রদানে আর্থ-রিসোর্স টেকনোলজি স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম বাস্তবায়িত হয় তারই নির্দেশে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু বেতবুনিয়ায় স্যাটেলাইটের আর্থ স্টেশনের উদ্বোধন করেন। বিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিদ্যা ও কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে ডা. মোহাম্মদ কুদরাত-এ খুদার মতো একজন বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট প্রণয়ন এবং শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার করার লক্ষ্য বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা ছিল তার অত্যন্ত সুচিন্তিত ও দূরদর্শী উদ্যোগ।

শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও বিকাশে গৃহীত নানা উদ্যোগ ও কার্যক্রমের দিকে তাকালে দেখা যাবে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই রচিত হয় একটি আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের ভিত্তি, যা বাংলাদেশকে ডিজিটাল বিপ্লবে অংশগ্রহণের পথ দেখায়।

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দার্শনিক প্রত্যয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১২ ডিসেম্বর ২০০৮। যখন বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা গড়ার’ দৃঢ় অঙ্গীকারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ‘রূপকল্প ২০২১’ ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনী অঙ্গীকারে বলা হয়, ‘২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত হবে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বাংলাদেশ আজ বিপ্লব সাধন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতায় পরিপূর্ণতা পেয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য সবার জন্য কানেক্টিভিটি, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, ই-গভর্মেন্ট এবং আইসিটি ইন্ডাষ্ট্রি প্রোমোশন এ চারটি সুনির্দিষ্ট প্রধান স্তম্ভ নির্ধারণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়িত হয়েছে। 

সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে মাত্র ১৩ বছরের মধ্যে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এনেছেন। যেখানে ৫৬ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল, সেখানে আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুগপোযোগী পরিকল্পনা ও সুপরামর্শে ব্রডব্যন্ড কানেক্টিভিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। দেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটির বেশি এবং মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৮ কোটির ওপরে।

জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৮ হাজার ৮০০টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছে। যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা রয়েছে। এর ফলে একদিকে নারী-পুরুষের বৈষম্য, অপরদিকে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য ও গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূর হয়েছে। বর্তমানে ডিজিটাল সেন্টার থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৭০ লাখেরও অধিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ডিজিটাল সেন্টার থেকে নাগরিকেরা প্রায় ৮০ কোটির অধিক সেবা গ্রহণ করেছেন। ফলে নাগরিকদের ৭৮ দশমিক ১৪ শতাংশ কর্মঘণ্টা, ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ব্যয় এবং ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ যাতায়াত সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সেন্টার সাধারণ মানুষের জীবনমান সহজ করার পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে দিয়েছে। মানুষ এখন বিশ্বাস করে, ঘরের কাছেই সব ধরনের সেবা পাওয়া সম্ভব। মানুষের এই বিশ্বাস অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের পথচলায় সবচেয়ে বড় পাওয়া।

পেপারলেস কমিউনিকেশন চালু করার লক্ষে সরকার ই-নথি চালু করে। চালু হওয়ার পর থেকে ই-নথিতে এ পর্যন্ত দুই কোটি চার লাখের অধিক ফাইলের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ই-নামজারি সিস্টেমে আগত ৫২ লক্ষেরও অধিক আবেদন মধ্যে ৪৫ দশমিক ৬৮ লক্ষেরও অধিক আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়েছে অনলাইনে।

এছাড়াও ‘স্টার্টআপ বাংলাদেশ কোম্পানি’ পৃথিবীর ইতিহাসে একটা অনন্যসাধারণ দৃষ্টান্ত।  দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতির বিকাশে ও স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী সুযোগ কাজে লাগানোর পথ সুগম করতে সরকার আগামী পাঁচ বছরে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। মেধাবী তরুণ উদ্যোক্তাদের সুদ ও জামানতবিহীন ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট এবং ট্রেনিং, ইনকিউবেশন, মেন্টরিং এবং কোচিংসহ  নানান সুবিধা দেয়ার ফলে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। বিকাশ, পাঠাও, চালডাল, শিওর ক্যাশ, সহজ, পেপারফ্লাইসহ দুই হাজার ৫০০ স্টার্টআপ সক্রিয় ভাবে কাজ করছে। যারা প্রায় আরো ১৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। ১০ বছর আগেও এই কালচারের সাথে আমাদের তরুণরা পরিচিত ছিল না। মাত্র সাত বছরে এ খাতে ৭০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এসেছে।

বিশ্বে অনলাইন শ্রমশক্তিতে ভাল অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক ও অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের (ওআইআই) এর সমীক্ষা মতে, অনলাইন শ্রমশক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে দ্বিতীয়। প্রায় সাড়ে ছয় লাখ প্রশিক্ষিত ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিং খাত থেকে অন্ততপক্ষে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে। যারা কিনা কোনো দিন আমেরিকা, ইংল্যান্ডে যায়নি। কিন্তু প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ওই দেশের কোম্পানিতে বাংলাদেশ তরুণরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসেও আউটসোর্সিং করে হাজার হাজার, লাখ লাখ ডলার আয় করতে সক্ষম হচ্ছে। ইতিমধ্যে নির্মিত ১০টি হাই-টেক/আইটি পার্কে বিনিয়োগের পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকা। ১৪ বছর আগে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। আর বর্তমানে তা এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সরকারের লক্ষ্য, ২০২৫ সালে আইসিটি রপ্তানি পাঁচ বিলিয়ন ডলার এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে আইসিটি খাতে কর্মসংস্থান ৩০ লাখে উন্নীত করা।  

১০৯টি হাইটেক/আইটি পার্কে/ শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন সেন্টারের (১৭টি বেসরকারি আইটি পার্ক) মধ্যে নির্মিত ১০টি পার্কে দেশি-বিদেশি ১৯২টি প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রযুক্তি শিক্ষায় পারদর্শী করে তুলতে এবং ডিজরাপ্টেড টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা দিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, ৫০০টি জয় ডি-সেট সেন্টার, শেখ হাসিনা ইন্সটিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আরও ৩৫ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। 

আমরা ই-নথি, জাতীয় তথ্য বাতায়ন, জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩, ই নামজারি, আরএস খতিয়ান সিস্টেম, কৃষি বাতায়ন, ই চালান, এক পে, এক শপ, এক সেবা, কিশোর বাতায়ন, মুক্তপাঠ, শিক্ষক বাতায়ন, আই-ল্যাব, করোনা পোর্টাল, মা টেলি হেলথ সার্ভিস, প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার, ভার্চুয়াল কোর্ট সিস্টেম, ডিজিটাল ক্লাসরুমসহ অসংখ্য সেবা চালু করেছি। এর মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে। ফলে, করোনার মতো মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশ দেখিয়েছে সাফল্য।

তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে, প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রত্যেকের হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, দুনিয়ার সব প্রান্তের খবর মুহূর্তেই এসে যাচ্ছে হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশ সরকারের সেবামূলক সব ফরম পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনে। শুধু তাই নয়, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরির আবেদন, পড়াশোনা, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ফোন বিলসহ বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ, মোবাইল মানি ট্রান্সফার, ব্যাংকিং, পাসপোর্ট আবেদন, ভিসা প্রসেসিং, বিমানের টিকিট, রেলওয়ে টিকিটিং, ইটেন্ডারিং, টিন সনদ, আয়কর রিটার্ন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন, জিডি, জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য করা যাচ্ছে অনলাইনে, অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

জাতীয় ওয়েব পোর্টাল, জাতীয় ই-তথ্যকোষ, জাতীয় ডেটা সেন্টার, জেলা ওয়েব পোর্টাল, জেলা ই-সেবাকেন্দ্র, উপজেলা ওয়েব পোর্টাল, ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র, ক্লাসরুমে মালটিমিডিয়া প্রজেক্টরের ব্যবহার, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব পাঠ্যপুস্তক নিয়ে ই-বুক, বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াই-ফাই চালু, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রকল্প, ফোরজি প্রযুক্তি, ই-ফাইলিং, মোবাইল ব্যাংকিং, মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যসেবা, কম্পিউটারভিত্তিক ভূমি ব্যবস্থাপনা, মন্ত্রণালয়ে ই-সেবা, হাইটেক পার্ক, ইপিআই ও আইটিইই সার্টিফিকেশন, ডট বাংলা ডোমেইন, ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিক, জাতীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী পুরস্কার প্রবর্তন, বিনিয়োগের জন্য অনলাইন নিবন্ধন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা, অনলাইনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তথ্য, কৃষিতথ্য সার্ভিস, ইলেকট্রনিক দরপত্র পদ্ধতি, ডিজিটাল স্বাক্ষর পদ্ধতির প্রবর্তনসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রসারে বিপ্লব সূচিত হয়েছে।

শুধু বিভাগীয় বা জেলা শহরে নয়, উপজেলা সদর ছাড়িয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে এমনকি দুর্গম অঞ্চলেও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পৌঁছে গেছে। হেল্পলাইনের মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে জরুরি সেবা পৌঁছে যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সেবা পাচ্ছে জনগণ, যা ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারি সেবা ও তথ্য কে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে ৩৩৩ শর্টকোড ব্যবহার করে কল সেন্টার ভিত্তিক জাতীয় সেবা চালু করা হয়। ইতিমধ্যে নাগরিকদের জীবন মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এবং ন্যাশনাল হেল্প লাইনসমূহে কল সরকারের বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করতে পারছে।

করোনা মহামারি থেকে দেশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে টিকা কার্যক্রম, টিকার তথ্য সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং সনদ প্রদানের লক্ষে ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে, যা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং দেশের জনগণ এর সুবিধা পাচ্ছে।

২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশে সরকারি কোনো সেবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সরকারি সব দপ্তরের প্রাথমিক সব তথ্য ও সেবা মিলছে ওয়েবসাইটে। সেই সঙ্গে সরকারি সব তথ্য যাচাই-বাছাই ও সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন পরিষেবা ও আবেদনের যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম ‘বিনিময়’ চালু করেছি। বর্তমানে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে গেছে প্রত্যেক গ্রাহকের হাতের মুঠোয়। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। ফ্রিল্যান্সিং থেকে আসা অর্থ আমাদের জাতীয় প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে আধুনিক ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এ সবকিছুই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল। 

নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করা, শহর ও গ্রামের সেবা প্রাপ্তিতে দূরত্ব হ্রাস করা এই সকলই ছিলো আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের  মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ফলে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মতো উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থানও নিশ্চিত করা গেছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও প্রযুক্তির কল্যাণেই এখন গ্রামে বসেই যে কেউ চাইলেই ফ্রিল্যান্সিং-এ কাজ করতে পারছে। এসবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছেজননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতির ফলে। সে কারণেই এবারের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি’।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সফলভাবে বাস্তবায়নের পর আমরা এখন নতুন কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। সেটি হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এ চারটি মূল ভিত্তির ওপর গড়ে উঠবে ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, স্মার্ট বাংলাদেশ।

- জুনাইদ আহমেদ পলক

#DigitalBangladesh #DigitalBangladeshDay #SheikhHasina #Bangladesh #বাংলাদেশ #AwamiLeague #SmartBangladesh #DBD #DBD2022

Get an Appointment

I want to learn your thoughts how together we can build ICT driven Economy for a sustainable Bangladesh